নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত ও নোয়াখালীর বিখ্যাত ব্যক্তিরা কারা
নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত এবং নোয়াখালীর বিখ্যাত ব্যক্তিরা কারা এই
সম্পর্কে যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টে বিস্তারিত জানতে পারবেন এর পাশাপাশি আপনারা জানতে পারবেন নোয়াখালীর বিখ্যাত খাবার কি ও ঢাকা থেকে
নোয়াখালী কত কিলোমিটার আরো অনেক বিষয়ে তাই জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত - নোয়াখালীর বিখ্যাত ব্যক্তিরা কারা
নোয়াখালীর পূর্ব নাম কি?
নোয়াখালী জেলা এক সময় ভুলুয়া নামে পরিচিত ছিল। নোয়াখালী সদর থানার আগের
নাম ছিল সুধারাম। দুইটি নোয়াখালীর পূর্ব
নাম পাওয়া গিয়েছে ১. সুধারাম ২. ভলুয়া। নোয়াখালী জেলার মোট আয়তন হচ্ছে ৪২০২.৭০ বর্গ কিলোমিটার। নোয়াখালী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত যা চট্টগ্রাম বিভাগের প্রশাসনিক অঞ্চল। নোয়াখালী বাংলাদেশের উপজেলার সংখ্যাঅনুসারে "এ" শ্রেণীভুক্ত জেলা।
নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত
নোয়াখালী এক দুইটি কারণে বিখ্যাত নয় এই বিখ্যাত হওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। নোয়াখালীর মানুষদের একটি নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী ভাষা আছে আর এই ভাষার কারণে নোয়াখালী জেলা খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে সারা বাংলাদেশ জুড়ে। এই নোয়াখালীর ভাষা গোটা বাংলাদেশ জুড়ে সব জেলার মানুষেরাই পছন্দ করে শুধু তাই নয় এই ভাষা বিভিন্ন নাটক, গান এবং সিনেমাতেও ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ভাষা ব্যবহার করে বিভিন্ন কমেডি নাটক তৈরি করা হয়ে থাকে তাই বলা যেতে পারে নোয়াখালী তার নিজস্ব ভাষার জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও নারকেল নাড়ু এবং মরিচ খোলজার নামে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খাবারের জন্যও নোয়াখালী সুপরিচিত। অনেক বছর আগে নোয়াখালী জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি উত্তরাধিকার, মেরা পিঠা, ছাইন্না পিঠা এবং পাটিসাপ্তা পিঠা ইত্যাদি খাবারের জন্য নোয়াখালী বিখ্যাত ছিল।
অতিথি আপ্যায়নের দিক দিয়ে নোয়াখালীর লোকেরা অতুলনীয়। ধার্মিকের দিক দিয়ে নোয়াখালীর মানুষদের অনেক সুনাম রয়েছে, দেশে বড় বড় আলেমদের কথা বলতে গেলে বেশিরভাগই নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেছেন যেমন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সাবেক খতিব ইত্যাদি এমন অনেক বড় বড় আলেমরা নোয়াখালীর সন্তান।
সময়ের অপচয়ের দিক দিয়ে নোয়াখালীর লোকদের অবস্থান বিপরীত কারণ কোন কাজ করার পর তারা একদম সময় নষ্ট করতে চায় না। দেশের বাইরেও এই নোয়াখালীর লোকেরা যথেষ্ট প্রশংসনীয় জায়গায় কাজ করে যেমন আমেরিকা ও ইউরোপে নোয়াখালীর লোকেরা ছড়িয়ে আছে।
নোয়াখালী বলতে তিনটি অঞ্চল কে বোঝানো হয়েছে যার মধ্যে চাঁদপুরের কিছু অংশকেও নোয়াখালীর অঞ্চল বলা হয়ে থাকে। আশা করি নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন।
নোয়াখালীর বিখ্যাত ব্যক্তিরা কারা
নোয়াখালী অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির বাসস্থান। অনেকেই জানার জন্য
ইন্টারনেটে গুগল সার্চ দিয়ে থাকেন নোয়াখালীর বিখ্যাত ব্যক্তি কারা
এবং তাদের নাম কি সে বিষয় নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। নিচে এক
নজরে নোয়াখালীর ১৫ জন বিখ্যাত ব্যক্তি তালিকা দেয়া হলোঃ
- আনম মুনীর চৌধুরী - তিনি বাংলা ভাষায় একজন প্রতিভাবান লেখক এবং একজন শক্তিশালী ভাস্কর ছিলেন।
- আতাউর রহমান - তিনি থিয়েটার এবং পর্দার জন্য একজন অভিনেতা, একজন মঞ্চ পরিচালক এবং একজন লেখক হিসাবে কাজ করেন।
- আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল - লেখক, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি বিখ্যাত।
- কবির চৌধুরী - তিনি একজন অনুবাদক এবং একাডেমিক লেখক।
- ঝর্ণা ধারা চৌধুরী - নোয়াখালী, একজন সমাজসেবক এবং গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সাবেক সেক্রেটারি, একজন সমাজকর্মী।
- ওবায়দুল কাদের - তার কাজের লাইন রাজনীতি। নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে ১৯৫২ সালের ১লা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর মাতার নাম ফজিলাতুন্নেসা এবং পিতার নাম মোশাররফ হোসেন।
- চিত্তরঞ্জন সাহা - আপনি বাংলা একাডেমি বইমেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বাংলাদেশের পেশাদার চিত্রশিল্পীদের বিকাশে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
- শিরীন শারমিন চৌধুরী - তিনি একজন সুপরিচিত রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রথম মহিলা স্পিকার।
- তারিন জাহান - একজন সুপরিচিত টিভি তারকা।
- শহীদুল্লাহ কায়সার - বাংলাদেশের একজন সাংবাদিক, লেখক এবং বুদ্ধিজীবী (অধুনালুপ্ত নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন)
- জহির রায়হান - একজন বাংলাদেশী লেখক, চিত্রনাট্যকার এবং গল্পকার (বর্তমানে বিলুপ্ত নোয়াখালী জেলা থেকে)
- শবনম বুবলী - বাংলাদেশের অভিনেত্রী।
- জিয়াউল হক পলাশ - তিনি জনপ্রিয় একজন টিভি অভিনেত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করে থাকে।
- হাবিবুর রহমান - স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তাকে বাংলাদেশের প্রথম বুদ্ধিজীবী শহীদ হিসেবে গণ্য করা হয়।
- এটিএম শামসুজ্জামান - একজন বাংলাদেশী অভিনেতা।
নোয়াখালীর বিখ্যাত খাবার কি কি
ইন্টারনেটে যদি বাংলাদেশের ৬৪ জেলার খাবার লিখে যদি সার্চ করে
তবে প্রথমেই নোয়াখালীর বিখ্যাত খাবার আসবে। 'কলা পাতার মরিচ খোলা'
নোয়াখালীর সবচেয়ে পরিচিত খাবার। এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে মাদ্রা পিঠা ও
নারকেল নাড়ু। আর এই দুটি পণ্য উৎপাদনের জন্য নারকেল একটি প্রয়োজনীয় উপাদান।
নোয়াখালী জেলার আয়তন কত
নোয়াখালী জেলার আয়তন ৪২০২.৭০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। ঢাকা থেকে নোয়াখালী জেলার দূরত্ব প্রায় ১৭১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে নোয়াখালীর দূরত্ব প্রায় ১৩৬ কিলোমিটার। নোয়াখালী জেলার জনসংখ্যা প্রায় ৩১০৮০৮৩ জন।
ঢাকা থেকে নোয়াখালী কত কিলোমিটার
বিভিন্ন বা অনেক প্রয়োজনে আমরা ঢাকা থেকে নোয়াখালী গিয়ে থাকি। তাই ঢাকা
থেকে নোয়াখালী কত কিলোমিটার তাজ জেনে রাখা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা থেকে নোয়াখালীর দূরত্ব ১৭২.৩ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে নোয়াখালীর মধ্যে
ভ্রমণের সময় ৩ ঘণ্টা ২৭ মিনিট। এবং নোয়াখালী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ১৭২.৩
কিলোমিটার। এছাড়া নোয়াখালী থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ২৭ মিনিট।
নোয়াখালী উপজেলা কয়টি
নোয়াখালীর উপজেলা সংখ্যা হচ্ছে ৯টি।
- নোয়াখালী সদর
- সোনাইমুড়ি
- সেনবাগ
- বেগমগঞ্জ
- চাটখিল
- সুবর্ণচর
- হাতিয়া
- কবির হাট
- কোম্পানীগঞ্জ
নোয়াখালী কোন বিভাগে অবস্থিত
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে নোয়াখালী জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক
এলাকা। একসময় এটি ভুলুয়া নামে পরিচিত ছিল। নোয়াখালী বাংলাদেশের একটি জেলা যা
উপজেলার সংখ্যার ভিত্তিতে "এ" ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে।
নোয়াখালীর দর্শনীয় স্থান গুলো কি কি
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম বিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য প্রশাসনিক এলাকা।
এই জেলায় বেশ কিছু পর্যটন আকর্ষণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নিঝুম
দ্বীপ, গান্ধী আশ্রম, বাজরা শাহী জামে মসজিদ, নোয়াখালী
ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক।
আমাদের শেষ কথা
আজকেরে এই আরটিকালে নোয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত এবং নোয়াখালীর বিখ্যাত
ব্যক্তিরা কারা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এছাড়াও নোয়াখালীর পূর্ব নাম
কি ও ঢাকা থেকে নোয়াখালী কত কিলোমিটার আরো অনেক বিষয় নিয়ে
আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি পোস্টটি পড়েছেন এবং উপকৃত
হয়েছেন।
আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে আমাদেরকে নিচে কমেন্টে জানাতে
পারেন। এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই বন্ধু ও পরিবারের সাথে শেয়ার করে দেবেন।
এতক্ষনতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
সিফাত ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url