গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়? মুড়ি খাওয়ার ক্ষতিকর কিনা জেনে নিন
মুড়ি খেতে কার না ভালো লাগে আমরা অনেকেই বিভিন্ন কাজের অবসর সময়ই মুড়ি খেয়ে থাকি এছাড়াও চা বা কফি সাথে মুড়ি খেয়ে থাকি
কিন্তু অনেক গর্ভবতী মহিলারা মুড়ি খাওয়া নিয়ে মনে একটু ভয় কাজ করে কারণ গর্ভাবস্থায় প্রতিটি খাবার সতর্কতার সাথে খেতে হয় তাই এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় এবং মুড়ি খাওয়া
ক্ষতিকর কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়া শিশু এবং মায়ের উভয়ের জন্য খুবই উপকারী কিন্তু
আমরা অনেকেই হয়তো জানি না।তাই এই আর্টিকেলে যারা গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়া
এড়িয়ে চলেন মুড়ি খাওয়ার ক্ষতি ভেবে এবং জানেন না যে গর্ভাবস্থায় মুড়ি
খেলে কি সে বিষয়ে আপনাদের জানাবো তাই জানতে হলে এই আর্টিকেল পোস্টটি মনোযোগ
সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়? মুড়ি খাওয়ার ক্ষতিকর কিনা জেনে নিন
ভূমিকা
যারা মুড়ি কিভাবে তৈরি হয় জানেন না তাদের সাধারণত ধান থেকে তৈরি করা
হয় পরে সেইটা একটি খোলাতে চাল গুলো ঢেলে আগুনে ভেজে তৈরি করা হয়।
এই মুড়ি ভারত এবং বাংলাদেশে প্রধান খাবার হিসেবে পরিচিত অনেকে
আছেন যারা চা বা কফির সঙ্গে মুড়ি খেয়ে
থাকেন
এছাড়াও অনেকেই একটু খিদে লাগলেই মুড়ি চিবাতে বসে যান কিন্তু
অনেকেই জানে না এই মুড়ির পুষ্টিগুণ উপকারিতা সম্পর্কে। অনেক
মা-বোনেরা আছেন গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়া এড়িয়ে চলেন ভয়ে। ভয়
পাওয়ার কিছুই নাই এই মুড়ির অনেক উপকারিতা রয়েছে যা আপনার
গর্ভের বাচ্চারও অনেক উপকার হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
আপনি হয়তো জানেন না গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি
হয়? গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে আপনিসহ আপনার বাচ্চার অনেক
স্বাস্থ্যগুণ উপকারিতা হয়েছে যা আমরা এই অংশে আপনাদের
জানাবো। চলুন তাহলে গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় সে
বিষয়ে আপনাদের জানাই গর্ভবতী হওয়ার পর একজন মায়ের শরীরে অনেক
ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়
সেই পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির
ঘাটতি পরে যার কারণে শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়।এই মুড়িতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণেই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং
আয়রন ইত্যাদি রয়েছে যা শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পুরোনে বিশেষ
ভূমিকা পালন করে এবং গর্ভাবস্থায় সন্তান সুস্থ
রাখে।
মুড়িতে রয়েছে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা ফলে মা
এবং বোনেরা গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে তাদের শরীরে শক্তি এবং
এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই মরিতে এসিড কম থাকার
কারণে গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে এসিডিটি সমস্যা কম দেখা যায়।
এছাড়াও মুড়ি খেলে শিশু এবং মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
পায় এছাড়াও গর্ভাবস্থায় যে বমি বমি ভাবটা হয় খাওয়ার প্রতি
রুচি থাকে না তাহলে আপনি প্রতিনিয়ত গর্ভাবস্থায়
মুড়ি খেতে পারেন ফলে এই বমি বমি ভাবটা চলে যাবে তবে অতিরিক্ত
মুড়ি খাবেন না পরিমাণ মতন খাবেন। আশা করি তাহলে গর্ভাবস্থায়
মুড়ি খেলে কি হয় এবার জানতে পেরেছেন।
মুড়ি খেলে কি ওজন কমে না বাড়ে?
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মুড়ি খেলে কি ওজন বাড়ে?
নাকি মুড়ি খেলে কি ওজন কমে? এই দুটো প্রশ্ন নিয়ে বেশ
কনফিউজ হয়ে যান তাই এই অংশে আমরা আপনাদের জানাবো মুড়ি খেলে
কি ওজন কমে না বাড়ে সে বিষয়ে। আপনার যদি
অতিরিক্ত স্বাস্থ্যেবান হয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্য
সঠিকওজন বজায় রাখার জন্য প্রতিনিয়ত মুড়ি খেতে পারেন।
এই
মুড়িতে থাকা কার্বনাইড্রেট আমাদের শরীরে শক্তি বাড়াতে সহায়তা
করে এবং মুড়িতে ফ্যাট এবং ক্যালোরি কম থাকার কারণে ওজন
কমাতে সাহায্য করে তাই আপনি যদি নিজের ওজন কমাতে চান খুব সহজে তাহলে
প্রতিনিয়ত মুড়ি খেতে পারেন। আশা করি তাহলে মুড়ি খেলে কি ওজন
কমে না বাড়ে? প্রশ্নের উত্তরটি আপনি পেয়ে গেছেন।
মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা অনেকেই চা বা কফি সঙ্গে মুড়ি খেয়ে থাকি অনেকেই আছেন যারা পানিতে
বা দুধের সঙ্গে মুড়ি ভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যস্ত কিন্তু আছে। হালকা খাবার
হিসেবে মুড়ি বেশ কাজের অনেকে একটু খিদে লাগলেই মুড়ির সাথে চানাচুর
মিশিয়ে খেয়ে থাকেন কিন্তু এর উপকারিতা জানেন না তাই এই অংশে আমরা
মুড়ি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব
প্রথমেই মুড়ি
খাওয়ার উপকারিতা আপনাদের জানাবো এবং শেষে মুড়ি খাওয়ার ক্ষতিকর
দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব। এই মুড়ির অনেক স্বাস্থ্যগুণ উপকারিতা
রয়েছে যেমন মুড়িতে উচ্চ পরিমাণে শর্করা রয়েছে যা শরীরে শক্তি
বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
মুড়িতে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের হজমে সহায়তা করে যার পাশাপাশি অন্তরে
অবস্থান ঠিক থাকতে সাহায্য করে।মুড়িতে থাকা ক্যালসিয়াম, আয়রন,
ফাইবার যা আমাদের শরীরে হাড় এবং দাঁত শক্ত করতে সাহায্য করে। মুড়ি
খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
তাছাড়াও হার্ট অ্যাটাক
হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। মুড়ি খাওয়ার বিশেষ উপকারিতা হচ্ছে
স্বাস্থ্য কমাতে সহায়তা করে তাই আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনার
খাবার তালিকা প্রতিনিয়ত মুড়ি রাখতে পারেন।
তবে মুড়ি খাবার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা রয়েছে বেশি মুড়ি খেলে
ডায়াবেটিস সম্ভাবনা বাড়ে। মুড়ি অতিরিক্ত খেলে রক্তে গ্লুকোজের
মাত্রা বাড়িয়ে দেয় সেজন্য বেশি মুড়ি খাওয়া ভালো না। আর যদি আপনার
মুড়ি খাওয়ার অপকারিতা গুলি অনুভব না করেন তাহলে পরিমাণ মতন মুড়ি
খেতে পারেন।
মুড়ি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
প্রতিটা জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে
তাই মুড়ির যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি মুড়ি খাওয়ার
ক্ষতিকর দিক রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে জানা আপনাদের খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। বেশি মুড়ি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
মরিতে প্রচুর পরিমাণে কার্বনহাইড্রেট রয়েছে যার কারণে বেশি
মুড়ি খেলে কিডনিতে পাথর হতে পারে এবং মরিতে লবণ যদি বেশি
থাকে তাহলে হাইপার টেনশন ও উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে
পারে তাই আমাদের উচিত পরিমাণ অনুযায়ী মুড়ি খাওয়া আশা
করি মুড়ি খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো জানতে পেরেছেন।
মুড়ি তে কত ক্যালরি আছে
আমরা অনেকেই মুড়ি খেয়ে থাকি কিন্তু এর উপকারিতা সম্পর্কে তেমন একটা
জানি না অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকতে পারে মুড়ি তে কত ক্যালরি
আছে? তাই এই অংশে আমরা মুড়ি তে কত ক্যালরি আছে সে
বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। ১৪ গ্রাম মরিতে প্রায় ৫৬টি
ক্যালরি আছে এছাড়াও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যেমন
- প্রোটিন ০.৯ গ্রাম
- সোডিয়াম ০.৭ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম
- ফাইবার ০.২ গ্রাম
- ফ্যাট ০.১ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস ১৪ মিলিগ্রাম
- আইরন ৪.৪০ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ৪ গ্রাম
এছাড়াও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যার কারণে তার খাবার তালিকা প্রতিনিয়ত
মুড়ি খেতে পারেন তবে অতিরিক্ত মুড়ি খাবেন না পরিমাণ মতন খাবেন
প্রতিনিয়ত।
মুড়ি খেলে কি গ্যাস্ট্রিক হয়
আপনি কি কোন ওষুধ না ছাড়াই আপনার পেটের গ্যাস কমাতে চান তাহলে
আপনার জন্য বেস্ট হবে এই মুড়ি। এই মুড়ি খেলে মাত্র দুই মিনিটেই
পেটের গ্যাস কমিয়ে ফেলে কোন ওষুধ ছাড়াই। মরিতে ভিটামিন বি
এবং মিনারেল থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
অনেকেই মাঝে
মাঝে পেটের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন এই পেটে সমস্যা দূর করতে
আপনি ঠান্ডা দুধ দিয়ে অথবা পানি দিয়ে মুড়ি ভিজিয়ে খেতে পারেন
হলে আপনার পেট ঠান্ডা থাকবে এবং যারা গ্যাস বদহজক সমস্যাই বুকে
থাকেন তারা তৎক্ষণিক মুড়ি খেতে পারেন। আপনি যদি দুই তিন মুঠো করে
মুড়ি খান প্রতিদিন তবে দুই মিনিটেই আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর হয়ে
যাবে।
আমাদের শেষ কথা
আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাসের বদহজমের সমস্যা এবং ক্যালসিয়াম ঘাটতি
দূর করতে যান তাহলে প্রতিনিয়ত মুড়ি খেতে পারেন। এই আর্টিকেল মাধ্যমে
আপনাদেরকে গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় এবং মুড়ি খাওয়ার ক্ষতিকর
দিকগুলো সম্পর্কে জানিয়েছি।
আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন এবং ভালোভাবে বুঝতে
পেরেছেন যদি কোন কিছু না বুঝে থাকেন অথবা কিছু জানার থাকে তাহলে নিচে
কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আরেকটি কথা অতিরিক্ত
কখনো মুড়ি খাবেন না কারণ অতিরিক্ত মুড়ি খেলে ডায়াবেটিসের
ঝুঁকি বাড়ায় তাই প্রতিনিয়ত পরিমান মতন মুড়ি খাওয়ার চেষ্টা
করুন। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য ধন্যবাদ।
সিফাত ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url